বর্তমানে কৃষি অনেকাংশে প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল। ফসলের বীজ বপন থেকে শুরু করে মাড়াই পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই প্রযুক্তির ব্যবহার হয়ে থাকে । কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে কৃষিকাজে এসেছে অনেক পরিবর্তন। ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে । ফসল বিপনন, বিতরণ ও সংরক্ষণকে করেছে অনেক সহজতর। তাই আমাদেরকে কৃষি সর্ম্পকৃত প্রযুক্তি জ্ঞান থাকতে হবে । তাই আসুন জেনে নেয়া যাক কয়েকটি আধুনিক কৃষিযন্ত্রের নাম ও ব্যবহার।
ব্যাচ ড্রায়ার (ধান, গম, ভুট্টা শুকানোর যন্ত্র )
ব্যাচ ড্রায়ার হল একটি আধুনিক শস্যদানা শুকানোর একটি যন্ত্র।বর্ষা মৌসুমে অতিবৃষ্টির ফলে ব্যাচ ড্রায়ার দিয়ে ধান, গম, ভুট্টাইত্যাদি সহজে শুকানো যায় ৷ আবহাওয়ার বৈরিতার কারণে বা ঠিকমত সূর্য দেখা না দিলে উল্লেখিত দানাদার শস্যগুলোর মারাত্মক ক্ষতি হয়। কেননা শস্যদানা ঠিকমত শুকিয়ে না নিলে তা সংরক্ষণ করা যায় না। এজন্য কৃত্রিম উপায়ে যন্ত্রের সাহায্যে এসমস্ত ফসল শুকানোর দরকার হয়।
যন্ত্রের বর্ণনা:
ড্রায়ারের বক্সের ভেতরের ভ্যান এক্সিয়েল ফেনের মাধ্যমে ১৮০০ সিএফএম প্রেসারে গরম বাতাস প্রবাহিত করে ঘণ্টায় ৩০% থেকে ১০% আর্দ্রতা কমিয়ে ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদি স্বল্প খরচ সহজে শুকানো যায় এবং সময় বাচে। এ যন্ত্র চালনা করতে জ্বালানি হিসাবে ডিজেল ও চারকোল ব্যবহৃত হয়৷
যন্ত্রের কারিগরি বিবরণ:
শক্তি: ৫-৮ অশ্বশক্তি
তাপমাত্রার পরিমাণ: ৩০০-৫০০ সেঃ
ওজন: ১.৫ মেঃ টঃ – ২.৫ মেঃ টঃ
ক্ষমতা: ১০০০-২০০০ কেজি প্রতি শিফটে (২ ঘণ্টা)
আয়তন (দৈXপ্রXউ): ঌX১.২৫X১.২৫ মি. (±)
প্রস্ততকারক: আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ
মাড়াইকল
ফসল মাড়াই করার ক্ষেত্রে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার আমাদের দেশে চালু হয়েছে। ধানসহ অন্যান্য দানাদার শস্য মাঠ থেকে কেটে এনে ভালভাবে মাড়াই করে সংরক্ষণ করতে না পারলে কৃষক তার কাঙ্খিত ফল থেকে বঞ্চিত হয়। আধুনিক এ মাড়াই যন্ত্র ব্যবহার করে ফসল মাড়াই কাজ খুব সহজেই করা যায়। এক্ষেত্রে সময় ও শক্তি উভয় বাঁচে। শস্য মাড়াই করার এ যন্ত্রটিকে মাড়াই কল বা মাড়াই যন্ত্র বলা যায়।
প্রস্তুরকারক: আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ
যন্ত্রের বৈশিষ্ট্য:
* উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন
* স্বল্পখরচ
* স্থায়িত্ব
* সহজপরিচালনা
* বিবিধব্যবহার
* বিক্রয়োত্তর সেবা
ব্যবহারের সুবিধা: এ যন্ত্র ব্যবহারে সময় ও্ শক্তি উভয় লাঘব হয়। দেশের প্রথম উদ্ভাবিত আলীম মাড়াই কল দিয়ে ধান, গম, প্রভৃতি সহজ ভাবে মাড়াই করে শতকরা ১০০ ভাগ খড় থেকে আলাদা করা সম্ভব৷
যন্ত্রেরবর্ণনা: বিশেষ ধরনের ধাতু দিয়ে প্রস্তুত করায় অধিক স্থায়িত্বের নিশ্চয়তা সহ এই মেশিন ইলেক্ট্রিক মটর/ ডিজেল ইঞ্জিন দ্বারা চালিত এবং সহজ কারিগরী পদ্ধতি থাকায় চালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা সহজ৷
যন্ত্রের কারিগরী বিবরণ:
* শক্তি: ৬-১৬ অশ্বশক্তি
* আয়তন (দৈXপ্রXউ) : ১৫০X১৩২X১৫০ সে.মি. (±)
* সরবরাহক্ষমতা: ১৫০০-২৫০০ কেজিপ্রতিঘন্টায় ।
পাওয়ার রিপার মেশিন
বর্তমান যুগ প্রৃযুক্তির যুগ। এপযুক্তি সময়কে করেছ যেমন লাঘব তেমন বিশ্বকে এনেছে হাতের মুটোয়। পরিবর্তন এনেছে কৃষি সহ বিভিনবন যন্ত্রের। উল্লেখ করা যায় পাওয়ার রিপার মেশিনের যার সাহায্যে অল্প সময়ে ও অল্প পরিশ্রমে অধিক পরিমাণ শস্য কাটা যায়। এ যন্ত্র দিয়ে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ বিঘা পর্যন্ত জমিতে ফসল কাটা যায়।
বৈশিষ্ট্য:
* উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন
* অধিকস্থায়িত্ব
* বিক্রয়োত্তরসেবা
* সহজপরিচালনা
* স্বল্পখরচ
* বিবিধব্যবহার
বর্ণনা: আলীম পাওয়ার রিপার দিয়ে দৈনিক ৮/১০ বিঘাধান, গমভুট্টা, সরিষা, সয়াবিন ইত্যাদি শষ্য সহজে কাটা সম্ভব৷ দেশীয় প্রযুক্তিতে বিশেষ ধরনের ধাতু দিয়ে প্রস্তুত করায় অধিক স্থায়িত্বের নিশ্চয়তাসহ সহজে চালনা এবং রক্ষণা বেক্ষণ করা যায়৷
কারিগরী বিবরণ: শক্তি ৪/৫ অশ্বশক্তি, আয়তন (দৈ:−প্র:−উ:) ২৩০−১৫০−১২০ সে.মি., ওজন ২০০ কেজি, ক্ষমতা ৮/১০ বিঘাপ্রতিদিন।
প্রস্ততকারক ব্র্যান্ড: আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ
হাইড্রোটিলারমেশিন (আগাছা দূরকরার যন্ত্র )
হাইড্রো টিলার মেশিন (আগাছা দূর করার যন্ত্র )
উপযোগীতা: ফসল উৎপাদনে আগাছা একটি বিরাট অন্তরায়। ফসলী জমিতে আগাছা নিয়ন্ত্রন করতে না পারলে কাঙ্খিত ফলন আশা করা য়ায় না। উৎপাদনে স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক কাঁদা ও পানি যুক্ত মাঠে চাষাবাদ করে জমির আগাছা কেটে মাটিতে মিশিয়ে সবুজ সার তৈরি করতে সক্ষম ৷
বর্ণনা: স্বল্প মূল্যে যা কৃষক সহজেই সংযোজন করতে পারে এবং স্থানীয়ভাবে ছোট ছোট কারখানায় সুলভ মূল্যেও যন্ত্রাংশ দ্বারা মেরামত করার সুবিধা রয়েছে৷ হাইড্রো টিলার ভাসমান অবস্থায় যে কোনো লোক সহজভাবে চালিয়ে কর্দমুক্ত করতে পারে৷
কারিগরী বিবরণ: শক্তি ৫-ঌ অশ্বশক্তি, ওজন ১০৫ কেজি (ইঞ্জিন ব্যতীত), আয়তন (দৈ:−প্র:−উ:): ১ঌ৫−১০০−৭৫ সে.মি., মাঠে চলার গতি ২.৫ কি:মি: প্রতি ঘন্টায়৷, ক্ষমতা ২ একর প্রতিদিন৷
প্রস্তুতকারক: আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ
ছবি কৃতজ্ঞতা: আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ, ইন্টারনেট
ব্যাচ ড্রেয়ার তৈরির উপকরন এবং এটা কি ভাবে কাজ করে এর একটা ভীডিও দেখতে পারলে এইটা তৈরি করতে সুবিধা হতো
Comments are closed.