লেবু একটি সুপরিচিত ফল এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় লেবুর উপকারীতা অনেক। সকলেই কম বেশি খেয়ে থাকি। তৃষ্ণা মেটাতে লেবুর শরবতের তুলনা নেই। দৈনন্দিন খাবারের সাথে অনেকেই লেবু খেয়ে থাকেন। আচার তৈরীতে ও লেবু ব্যবহার হয়ে থাকে। লেবু ছোট একটা ফল কিন্তু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় লেবুর উপকারিতা প্রচুর এবং পুষ্টিগুণেও ভরপুর। প্রথমে জেনে নেই লেবুতে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে- এতে রয়েছে ৬ ভাগ সাইট্রিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি৫, বি৩, বি১, বি২, প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, জিঙ্ক, কার্বহাইড্রেট ফ্যাট এবং প্রোটিন।
আসুন এবার জেনে নিই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় লেবুর চিত্তাকর্ষক সব উপকারিতা:-
শক্তি বৃদ্ধিতে:
শরীরের সার্বিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। লেবুর রস পরিপাক নালীতে প্রবেশ করে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে। এটি মানসিক চাপ কমায় ও মেজাজ ফুরফুরা রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
লিভারসুরক্ষায়:
লেবুতে একধরনের বিদ্যমান সাইট্রিক অ্যাসিড কোলন রয়েছে যা পিত্তথলি ও লিভার থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে লিভারকে সচল রাখতে সাহায্য করে।
কিডনির পাথর:
লেবুতে উপস্থিত লবণ বা সাইট্রিক অ্যাসিড রয়েছে যা কিডনিতে ‘ক্যালসিয়াম অক্সালেট’ নামক পাথর গঠনে বাধা সৃষ্টি করে। সবচেয়ে সাধারণ কিডনি পাথরগুলোর মধ্যে এটি একটি।
হজমে সাহায্য করে:
লেবুর রস হজমে ব্যাপক সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করে এবং সেইসঙ্গে পরিপাক নালী থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়।
ভাইরাসজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধে:
লেবুতে রয়েছে ফ্ল্যাবোনয়েড যা শরীরে ভাইরাস প্রতিরোধ করে এবং শরীরকে ফিট রাখে। ভাইরাসজনিত সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে লেবুর রস। শরীরের পিএইচ ঠিক রাখে।
ওজন হ্রাস করার ক্ষেত্রে:
লেবুতে প্রচুর পরিমাণে পেক্টিন থাকে যা ক্ষুধার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। ফলে ওজন কমে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা খালি পেটে লেবুর রস খান, তাদের ওজন দ্রুত হ্রাস পায়।
মূত্রনালীর সংক্রমণ দূরীকরণে:
মূত্রনালির প্রদাহ এবং গনেরিয়া প্রতিরোধে লেবুর শক্তি অনেক। যদি মূত্রনালীতে সংক্রমণ ঘটে তাহলে প্রচুর পরিমাণে লেবুর রস পান করলে সহজেই এ রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করা যায়।
চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে:
চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে লেবুর রস গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। লেবুর রস চোখের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং চোখের সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধে:
ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। উল্লেখ্য যে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে এর জুড়ি নেই।
প্রফুল্ল মন:
লেবু খাবার থেকে শক্তি শোষণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। আর এর গন্ধে মন ফুরফুরে হয়ে উঠবে নিমিষেই এবং দুশ্চিন্তা এবং বিষণ্ণতা দূরীকরণেও এটি অসামান্য কাজ করে।
রক্তবাহী ধমনী ও শিরাগুলোকে পরিষ্কার করতে:
শরীরের রক্তবাহী ধমনী ও শিরাগুলোকে পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে লেবু।
দাঁতে ব্যথা কমাতে:
দাঁতের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং দাঁতে ব্যথা কমায়। এছাড়া দাঁতের যত্নে ভালো পেস্টের চেয়েও ভালো কাজ করে লেবুর রস।
বুক জ্বালাপোড়া দূরীকরণে:
বুক জ্বালাপোড়া দূর করে। যাদের এই সমস্যা আছে রোজ আধা কাপ পানির মাঝে ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে বুক জ্বালাপোড়া দূর হয়।
গর্ভবতী নারী ও গর্ভের সন্তানের জন্য ভীষণ উপকারি:
গর্ভবতী নারীদের জন্য খুবই ভালো লেবু পানি। এটা শুধু নারীর শরীরই ভালো রাখে না। লেবুর ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম শিশুর হাড়, মস্তিষ্ক ও দেহের কোষ গঠনে সহায়তা করে।
কিভাবে লেবুর রস পান করবেন:
প্রথমে এক গ্লাস বিশুদ্ধ কুসুম গরম পানিতে একটি লেবুর রস মেশান। মনে রাখবেন বরফ ঠাণ্ডা পানি অপেক্ষা উষ্ণ গরম পানি শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বেশি সহায়ক। এরপর একটি টাটকা লেবুর অর্ধেক অংশ এক গ্লাস বিশুদ্ধ কুসুম গরম পানিতে নিয়ে কিছুক্ষণ ঝাঁকাতে থাকুন। উল্লেখ্য যে সকাল ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম করার পর হালকা কিছু খেয়ে এই শরবত পান করতে পারেন।
***স্বাস্থ্য সুরক্ষায় লেবুর উপকারীতা সর্ম্পকে আরো তথ্য পেতে আমাদের সংঙ্গে থাকুন।