এই শীতে মধু চাষ করে লাখ টাকা আয় করতে পারেন!!

0
4514
এই শীতে মধু চাষ করে লাখ টাকা আয় করতে পারেন!!

বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেন শীতকে ঘিরে, আর শীত মৌসুমে সরিষা ক্ষেতগুলি বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে সাজায় নতুন করে। শীত মৌসুমে প্রায় প্রতিটি গ্রামে সরিষা ক্ষেত দেখতে পাওয়া যায়। এই  প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা সরিষা ক্ষেতে যদি বাড়তি অর্থ উপার্জন করতে পারেন তাহলে তো কোনো কথাই নেই, হ্যাঁ শুধুমাত্র মৌ-মধু চাষ করে আয় করা সম্ভব ৫০ হাজার থেকে লাখ টাকার উপরে। এতে একদিকে যেমন বাড়তি অর্থ উপার্জন করা যায় তেমনি দেশের মধুর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

প্রাচিন কাল থেকে মৌমাছি আমাদের নিকট এক প্রকার ক্ষুদ্র, পরিশ্রমী ও উপকারী পতঙ্গ।  এরা সাধারণত দলবদ্ধভাবে বসবাস করে। এরা ফুল, ফল ও শস্য জাতীয় ফসলের পরাগায়ন ঘটিয়ে উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। তবে বাংলাদেশে আধুনিক পদ্ধতিতে মৌমাছির চাষের ফলে মধু আহরণ দিন দিন বেড়ে চলেছে। যথাযথ প্রশিক্ষণ ও সঠিক পালন ব্যবস্থা জানলে মৌ চাষ হতে পারে একটি লাভজনক ব্যবসা। বিসিকের মৌ-চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালকের মতে, যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মৌ চাষীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। তিনি বলেন যে, বাংলাদের প্রাকৃতিক পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে প্রতি বছর এক লাখ টনের বেশি মধু উৎপাদন করা সম্ভব। তিনি আরো বলেন, মৌ চাষীদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে স্বল্প সুদে ঋণের মাধ্যমে মৌ বাক্স, মৌ মাছিসহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগীতা প্রদান করা হচ্ছে।

মধু চাষ

জানা গেছে, দুই প্রজাতির মৌমাছি কাঠের বাক্সে চাষ করার জন্য বেশ উপযোগী, একটি হল এপিস ও আরেকটি মেলিফেরা। একটি কোলোনির মধ্যে অনেকগুলো রানী ও শতাধিক পুরুষসহ ২৫ থেকে ৩০ হাজার শ্রমিক মৌমাছি দলবদ্ধভাবে বাস করে। এরা একই স্থনে বসবাস করতে বেশ পছন্দ করে তাই এদের সহজে পোষ মানানো সম্ভব। এ ধরনের মৌমাছি একাধিক  চাক তৈরি করতে পারে, তাই এই মৌমাছির মাধ্যমে মধুর উৎপাদন বাড়ানো যায়। তবে আমাদের দেশে এই প্রজাতির মৌমাছির চাষ শুরু হয় ১৯৯৫ সালের দিকে।

বাণিজ্যিকভাবে মৌ-চাষের জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত প্রশিক্ষণ। আর এর জন্য বিসিক উদ্যোক্তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য সহায়তা দিয়ে আসছে। এ ধরনের প্রশিক্ষণের জন্য বিসিকে উৎপাদনমুখী ৬টি প্রদর্শনী কেন্দ্র আছে। সেগুলো রয়েছে গাজীপুরের ভাদইন, দিনাজপুরের বাসেরহাট, বাগেরহাটের যাত্রাপুর, সিলেটের খাদিমনগর, বরিশালের কাউনিয়া, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। এছাড়াও, আধুনিক পদ্ধতিতে মৌ-চাষের জন্য প্রশিকা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।

মৌ-চাষের আয় ও ব্যয়:

শীতকালে সরিষা ক্ষেত ও অন্যান্য ফুল, ফলের বাগানের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকলে যথাযথ প্রশিক্ষণ নিয়ে মৌ-চাষ করলে একটি বাক্স থেকে ৮-১০ কেজি মধু এবং সারা বছরে ২০-২৫ কেজি মধু আহরণ করা যায়।

আয়: একটি বাক্সে,

উৎপাদিত মধু                  =১০ কেজি

প্রতি কেজি ৩০০ টাকা হলে

মোট (১০ x ৩০০)                         =৩,০০০ টাকা

ব্যয়:

মৌমাছির বাক্সের দাম =     ৭০০ টাকা

মৌমাছির দাম            =     ৭০০ টাকা

কৃত্রিম খাদ্য               =     ৫০ টাকা

অন্যান্য                     =     ৫০ টাকা

মোট                         =     ১৫০০ টাকা

সুতরাং আধুনিক পদ্ধতিতে মধু চাষ, বোতলজাতকরণ সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে, আমাদের দেশে গুণগতমানের মধু উৎপাদন করা সম্ভব হবে এবং পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির করে আয়বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখা যাবে।

মধু চাষ সর্ম্পকে আরো তথ্য জানতে আমাদের সংঙ্গে থাকুন।