একই গাছের শেকড়ে আলু ও কান্ডে টমেটোর বাম্পার ফলন কৃষি গবেষনায় এ অভূতপূর্ব ও বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) অধীন জেলার বুড়িচং উপজেলার সৈয়দপুর উদ্যান উন্নয়ন কেন্দ্র। এখানে বীজতলায় গবেষণা চালিয়ে ‘পমেটো’ নামের এই নতুন চাষ পদ্ধতির উদ্ভাবন করা হয়েছে। কুমিল্লায় বিএডিসির গবেষণায় আলু (পটেটো) ও টমেটোর চারার সঙ্গে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে(জোড়কলম) ‘পমেটো’র(পটেটো+টমেটো=পমেটো)কাংখিত উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, একই গাছের মাটির উপরের কান্ডে ফলেছে উন্নতমানের বড় আকারের অনেক টমেটো। ওই গাছের মাটির নিচের অংশের শেকড়ের ভাজে ভাজে বড় আকারের আলু ফলেছে। একই গাছে আলু ও টমেটো ফলানোর এ ধরণের চাষ পদ্ধতি গবেষকসহ উদ্যান সংশ্লিষ্ট সবাই উদ্ভাবনী সাফল্যে তা দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বিএডিসি। একই সময়ে ডায়মন্ড জাতের আলু এবং পার্শ্ববর্তী স্থানে ‘হাইব্রিড সফল’ ও ‘উফশী রতন’ জাতের টমেটোর বীজতলায় আলু ও টমেটোর বীজ বপন করা হয়।
বীজতলা তৈরির পূর্বে আলুর জমিতে ২ থেকে ৩ বার হালকা সেচ দিতে হয় এবং টমেটোর বীজতলায় ঝাঁঝরি দিয়ে একইভাবে সেচ দিতে হয়। বীজতলায় উভয় চারার বয়স ২২ দিন হওয়ার পর গ্রাফটিং পদ্ধতিতে আলু চারার সাথে টমেটোর চারার গ্রাফটিং বা ফাঁটল জোড়কলম করা হয়। গ্রাফটিং করার ৫ দিন ও ২০ দিন পর আবারো সেচ দিতে হয়। আলু চারার সাথে টমেটোর চারার গ্রাফটিং বা ফাঁটল জোড়কলম করার ১২ দিনের মাথায় আলু চারার সাথে টমেটোর জোড়কলমে ফুল ফুটে। এ গাছের মাটির নীচে আলু আর উপরে ফলে টমেটো- যা এ উদ্যান কেন্দ্রের সফল উদ্ভাবনী গবেষণার এক চমকপ্রদ সাফল্য।
সৈয়দপুর উদ্যান উন্নয়ন কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ও সফল গবেষক মো. নিগার হায়দার খান জানান, একই গাছে টমেটো ও আলুর এ চাষ পদ্ধতিতে প্রত্যাশার চেয়েও অধিক ফলন অর্জিত হয়েছে। তিনি বলেন, এ চাষ স্বল্প পরিসরে বাড়ির আঙ্গিনায় বা ভবনের ছাদে করা যাবে। গ্রাফটিং (জোড়কলম) পদ্ধতির এ চাষ পেশাদার সবজি চাষীদের মতো বিস্তীর্ণ জমিতে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে করা যাবে না। শহর বা অভিজাত এলাকার স্বল্প পরিসরের জায়গায় সৌখিন লোকজনের জন্য এ পদ্ধতিতে ‘একের ভেতর দুই’ হিসেবে পমেটোর চাষ অত্যন্ত সুবিধাজনক। গবেষক মো. নিগার হায়দার খান আরও জানান, একই গাছে আলু ও টমেটোর চাষ পদ্ধতি দেখার জন্য অভিজাত মহলের ভবন মালিক ও সবজি চাষে সৌখিন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লোকজন এই উদ্যানে প্রতিদিন আসছেন এবং তারা বাড়ির আঙ্গিনায় ও ভবনের ছাদে ‘পমেটো’ (পটেটো+টমেটো=পমেটো) চাষে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করছেন।