কোরবানির হাটে রোগমুক্ত, স্টেরয়েড বিহীন সুস্থ পশু চেনার উপায়

0
1663
কোরবানির হাটে রোগমুক্ত, স্টেরয়েড বিহীন সুস্থ পশু চেনার উপায়
কোরবানির হাটে রোগমুক্ত, স্টেরয়েড বিহীন সুস্থ পশু চেনার উপায়

ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর বাজার। সবাই ইতোমধ্যে কোরবানীর পশুর ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছেন। যাদের বাড়িতে রাখার জায়গা আছে তারা হয়তো ইতোমধ্যে কোরবানির পশু কিনে বিশেষ যত্ন খাতির শুরু করছেন এবং মাংস কতটুকু হতে পারে সে বিষয়ে নানান রকম পর্যালোচনা করছেন! বাজারে যত প্রকারের চার-পেয়ে প্রাণী রয়েছে দো-পেয়ে প্রাণীকূল তার চেয়ে বেশি প্রকারের দুরভিসন্ধি নিয়ে বসে আছে। এসকল অতি মুনাফা লোভীদের কারণেই কোরবানির পশু কেনার সময় নানারকম সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। একটু অসতর্ক হলেই বিপদ। বাজার থেকে কিউট লুকের স্মার্ট গরু কিনে আনবেন কিন্তু আপনি জানতেও পারবেন না কতবড় লস করলেন! কৃত্রিমভাবে স্টেরয়েড খাইয়ে মোটাতাজা করা গরুর ভিড়ে সত্যিকার স্বাস্থ্যবান ও সুস্থ্ গরু চেনা একটু কঠিন বৈকি। তবে কিছু বিষয় খেয়াল করলে ভালো গরু চিনে নেওয়া সম্ভব।

গরুর প্রকৃতি:
স্টেরয়েড ট্যাবলেট খাওয়ানো বা ইনজেকশন দেয়া গরু হবে খুব শান্ত। ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারবে না। ঊরু অনেক মাংসল মনে হবে।

ফুলে যাওয়া গরু:
অতিরিক্ত হরমোনের কারণে পুরো শরীরে পানি জমে মোটা দেখাবে। আঙ্গুল দিয়ে গরুর শরীরে চাপ দিলে সেখানে দেবে গিয়ে গর্ত হয়ে থাকবে।

খাবারের প্রতি অনাগ্রহ:
গরুর মুখের সামনে খাবার ধরলে যদি নিজ থেকে জিহবা দিয়ে খাবার টেনে নিয়ে খেতে থাকে তবে বোঝা যাবে গরুটি সুস্থ। যদি অসুস্থ হয়, তবে সে খাবার খেতে চাইবে না।

এছাড়াও:
– সুস্থ গরুর নাকের উপরটা ভেজা ভেজা থাকে।
– সুস্থ গরুর পিঠের কুঁজ মোটা ও টান টান হয়।
– বিশেষ করে গরুর পা ও মুখ ফোলা, শরীর থলথল করবে, অধিকাংশ সময় গরু ঝিমাবে, সহজে নড়াচড়া করবে না। এসব গরু অসুস্থতার কারণে সবসময় নিরব থাকে। ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারে না, খাবারও খেতে চায় না।
অসুস্থ পশু চেনার উপায়:
– অতিরিক্ত ঝিমানো
– পায়ের পাতা ফোলা
– শরীরে ব্যথা
– ক্ষ্যাপাটে ভাব
– শরীরে শক্তি কম
– মুখ দিয়ে লালা পড়া
– জিহ্বা বের হয়ে থাকা
– চোখের পাতা ফোলা
এসকল উপসর্গ যদি দেখা দেয় তাহলে বুঝবেন পশুটি অসুস্থ।

আরো কিছু লক্ষ্যনীয় ব্যাপার:
(১) নিজে না চিনলে অভিজ্ঞ কাউকে সাথে নিয়ে যাবেন।একটু চা-পানের খরচ বেশি হলেও আখেরে আপনারই লাভ হবে!

(২) দিনের আলো থাকতে থাকতেই কোরবানির পশু কেনার উৎসবে যোগ দিন! রাতের বেলা হিরোর লাহান গরু কিনে পরদিন সকালে যখন দেখবেন সেটা ভিলেন, তখন কপাল চাপড়ানো ছাড়া আর কিছুই করার থাকবেনা!

(৩) গরুর মুখের সামনে কিছু খাবার ধরুন (চিকেন, বার্গার, হটডগ এসব কিছু না, সাধারণ খড়কুটো হলেই চলবে!)। গরু যদি নিজ থেকে জিহবা দিয়ে খাবার টেনে নিয়ে খেতে থাকে তবে বোঝা যাবে গরুটি সুস্থ। অসুস্থ গরুর খাবারের প্রতি যথেষ্ঠ অনীহা থাকে।

(৬) যেকোনো অবস্থায় দেশি গরু কেনার চেষ্টা করুন। ইন্ডিয়া বা মিয়ানমার থেকে আসা গরুগুলো অনেক দূর থেকে আসে বলে ক্লান্ত হয়। অনেক সময় ছোট-খাট আঘাতপ্রাপ্তও হয়। তাছাড়া এই গরুগুলো মূলত রিজেক্টেড হয়ে থাকে।

(৭) পশু কেনার আগে এর শরীরের কোথাও ক্ষত আছে কিনা পরীক্ষা করে নিন।

(৮) শিং ভাঙ্গা আছে কিনা, লেজ, মুখ, দাঁত, খুর এসব কিছুই পরীক্ষা করে দেখুন, কোনো ত্রুটি চোখে পড়ে কিনা।

মহান আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টির জন্য যে পশুটি আপনি কুরবানি দিবেন সেটি যেন হয় সাস্থ্যবান, সুস্থ, স্টেরয়েড মুক্ত ও নিখুঁত। আল্লাহ পাক সবার কুরবানিকে কবুল করে নিন।

পোস্টটি উপকারী মনে হলে বেশি বেশি শেয়ার করে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিন যাতে অন্যরাও সতর্ক হতে পারে।